যত বেশি লাগাবেন তত বেশি ফল পাবেন। কম্পিউটারের মেমোরী সম্পর্কে এধারনাই প্রচলিত। অর্থাৎ আপনার যতটা সাধ্য আছে কিনবেন এবং কম্পিউটারের যতটা সাধ্য আছে লাগাবেন। আপনার কম্পিউটারের গতি বাড়তেই থাকবে।
আসলে বিষয়টি কি। মেমোরী কিভাবে গতি বাড়ানোর কাজটি করে। ইচ্ছেমত মেমোরী বাড়াতে থাকলে গতি বাড়তেই থাকবে এর সত্যতাই বা কতটুকু। আসলে মেমোরী ঠিক কোন কাজটি করে।
মেমোরী কম্পিউটারের এমন একটি অংশ যেখানে তথ্য জমা থাকে। অন্য ডিস্ক থেকে এর পার্থক্য হচ্ছে প্রসেসর সরাসরি এখান থেকে তথ্য পড়তে পারে। অন্যভাবে বললে, আপনি হার্ডডিস্ক থেকে একটি ফাইল পড়ছেন (ওপেন করছেন) বলার অর্থ হল ফাইলকে মেমোরী নাম যায়গায় পাঠাচ্ছেন। মেমোরী বা র্যাম হচ্ছে একটি যায়গার নাম যা তথ্যকে রাখতে পারে।
আপনি যে অপারেটিং সিষ্টেমই ব্যবহার করুন না কেন, উইন্ডোজ ৯৮, এক্সপি, ভিসতা অথবা লিনাক্স বা অন্যকিছু, যখন অপারেটিং সিষ্টেম চালু হয় তার কিছুটা অংশ মেমোরীতে জমা হয়। অর্থাৎ সে কিছুটা যায়গা দখল করে। এটুকু না থাকলে আপনি সেই অপারেটিং সিষ্টেম ব্যবহার করতে পারবেন না। উদাহরন, ৫১২ মেগাবাইট মেমোরী না হলে ভিসতা ব্যবহার করতে পারবেন না। কোন অপারেটিং সিষ্টেমে কতটুকু মেমোরী প্রয়োজন তা উল্লেখ করা থাকে।
এর কাজের কথায় আসা যাক। আগেই যেমনটি বলা হয়েছে, আপনি যে প্রোগ্রাম ওপেন করবেন, ওপেন করার অর্থ তার একটা অংশ মোমোরীতে পাঠানো। সে আরো কিছুটা যায়গা দখল করে। প্রোগ্রামটি কতটুকু যায়গা ব্যবহার করবে সেটা সেই প্রোগ্রামের ওপর নির্ভর করে। যেমন ইমেইল ব্যবহারের জন্য সামান্য যায়গাই যথেষ্ট, ওয়ার্ডের জন্য তারচেয়ে বেশি, ফটোশপের জন্য তারচেয়ে বেশি। আবার ভার্শনের ওপরও এটা কমবেশি হয়। যে পরিমান মেমোরীতে ফটোশপ ৫ ব্যবহার করতে পারবেন সেই পরিমান মেমোরীতে ফটোশপ সিএস-৪ ব্যবহার করা যাবে না।
এরপর কাজের বিষয়ে আসা যাক। আপনি সেই প্রোগ্রামে যে ডকুমেন্ট ওপের করবেন সেটা মেমোরীতে যায়গা দখল করবে। যদি মাইক্রোসফট ওয়ার্ডে টেক্সট নিয়ে কাজ করেন আপনার অল্প যায়গাতেই চলবে, যদি ফটোশপে ভিউকার্ডের সমান ইমেজ নিয়ে কাজ করেন তাহলে তারচেয়ে বেশি মেমোরী প্রয়োজন হবে, যদি পোষ্টার সাইজের ছবি নিয়ে কাজ করেন তাহলে প্রয়োজন হবে আরো বেশি। ছবিতে লেয়ার যত বাড়বে মেমোরীতে তত বেশি যায়গা প্রয়োজন হবে।
কোন কোন সফটওয়্যারে প্রসেসিংএর জন্য উল্লেখযোগ্য পরিমান মেমোরী প্রয়োজন হয়। যেমন এনিমেশন কিংবা ভিডিও রেন্ডারিংএর সময়। আপনার কাজ যত জটিল হবে, মেমোরীর প্রয়োজন হবে তত বেশি। আসলে কতটা প্রয়োজন জানার জন্য সেই সফটওয়্যারের তথ্য দেখুন। তারা স্পষ্ট করে সবকিছু লিখে দেয়।
সাধারন ধারনা হচ্ছে, মেমোরী বাড়ালে স্পিড বাড়ে। বাস্তবে স্পিড বাড়ানোর সাথে মেমোরী কোন সম্পর্ক নেই। যা ঘটে তা হচ্ছে আপনার যদি প্রয়োজনের চেয়ে কত মেমোরী থাকে তাহলে অপারেটিং সিষ্টেম হার্ডডিস্ককে মেমোরী হিসেবে ব্যবহার করে, ফলে স্পিড কম মনে হয়। স্পিড সঠিক পাওয়ার জন্য হার্ডডিস্কে যথেষ্ট পরিমান যায়গা ফাকা রাখার বিষয়টিও গুরুত্বপুর্ন।
আপনার ঘুমানোর জন্য শরীরের সাথে মানানসই বিছানা প্রয়োজন। ফুটবল মাঠের সমান বিছানা আপনার কোন কাজে আসবে না। অতিরিক্ত মেমোরীর বিষয়টি ঠিক তেমনই। আপনার অপারেটিং সিষ্টেম, এপ্লিকেশন সফটওয়্যার, কাজ সবকিছু হিসেব করে ঠিক করুন আপনার কম্পিউটারে কতটুকু মেমোরী প্রয়োজন।