July 6, 2010

কম্পিউটারে বাংলা নিয়ে ঘুরপাক Bangla, Digital Bangladesh and Computer Technology

বাংলাদেশ ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের সদস্যপদ লাভ করেছে। এখন বাংলাদেশও ভোট দেয়ার অধিকারী। শেষপর্যন্ত একটা স্বপ্নের সিড়ি পার হলাম, বলছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের প্রণেতা জনাব মোস্তফা জব্বার। এজন্য ১ বছরের ১২ হাজার ডলার চাদা দিতে হয়েছে বাংলাদেশকে। প্রতিবছর চাদা দিয়ে এই সদস্যপদ নবায়ন করা হবে। সমস্যপদপ্রাপ্তি নিঃসন্দেহে একটি বড় ধরনের মাইলফলক অর্জন, বলেছেন তিনি।

তিনি গুনিজন, অনেক বড় বিষয় নিয়ে মাথা ঘামান। কাজেই তার কথা অবহেলা করার দুঃসাহস নেই। একজন সাধারন ব্যবহারকারী হিসেবে অভিজ্ঞতার কথা নিশ্চয়ই বলতে পারি। অন্তত মত প্রকাশের স্বাধীনতায় অন্য দেশের থেকে বাংলাদেশ এগিয়ে একথা যখন জোরেসোরেই বলা হয়।
সাম্প্রতিক বিষয় দিয়েই শুরু করি। বিজয় বায়ান্ন ২০১০ নামে একটি সিডি বাজারে পাওয়া যায়। দাম মাত্র ১০০ টাকা। একেবারে পানির দামে। কিংবা পাইরেটেড সফটঅয়্যারের দামের কাছাকাছি বলতে পারেন। যিনি সফটঅয়্যার তৈরী করেন তার মেধা-শ্রম-সময় কোনকিছুর দামই এতে হয়না।
সিডিটা চালু করুন। একটি মেনু পাবেন। এক্রোব্যাট রিডার, এন্টিভাইরাস, ডাউনলোড ম্যানেজার, ব্রাউজার, কুইকটাইম, ওপেনঅফিস ইত্যাদি ইনষ্টল করার সুযোগ পাবেন। আপনাদের উপকারার্থে এগুলি সিডিতে দেয়া হয়েছে। কেন, কোন সর্তে দেয়া হয়েছে সে প্রশ্ন এই সফটঅয়্যারগুলির নির্মাতা প্রশ্ন করতে পারেন। সেগুলি বিনামুল্যের, তারপরও সম্ভবত বিতরনের জন্য কিছু সর্ত মানতে হয়।
সে যাকগে- সেটা তাদের মাথাব্যথা।
মুল বিষয়ের দিকে দৃষ্টি দেয়া যাক। সেখানে সবচেয়ে বড় করে যা লেখা রয়েছে তা হচ্ছে উইন্ডোজ এক্সপির জন্য প্রনিত বিজয় বায়ান্ন ২০১০ ইনষ্টলার
এতে গাইড নামে একটি পিডিএফ ফাইল দেয়া হয়েছে। তিনি বাংলার জন্য কি কি করেছেন সে বর্ননা পড়তে পারেন। আর যদি বাংলা ব্যবহার করাই উদ্দেশ্য থাকে তাহলে সরাসরি দ্বিতীয় অধ্যায়ে চলে যান। উইন্ডোজ এক্সপি, উইন্ডোজ ভিস্তা, উইন্ডোজ ৭ এর ৩২ বিট সংস্করন চলে এমন কম্পিউটার ব্যবহার করুন
উইন্ডোজ এক্সপির জন্য প্রনিত বিজয় ভিস্তা কিংবা উইন্ডোজ ৭ এ কিভাবে ব্যবহার করা যাবে তিনি নিশ্চয়ই জানেন।
আরো কয়েক লাইন এগিয়ে যান,
বিজয় বায়ান্ন ২০১০ ব্যবহার করার জন্য উইন্ডোজ এক্সপি প্রয়োজন হবে।
আরো কিছুদুর এগিয়ে যান। কিভাবে ইউনিকোড অপশন ব্যবহার করবেন তা ব্যাখ্যা করছেন তিনি। সিডিতে রাখা বিজয়একুশে২০০৭ উইটিলিটিসফটঅয়্যার ফোল্ডার থেকে একটি ডিএলএল কপি করবেন উইন্ডোজ এর সিষ্টেম ৩২ ফোল্ডারে। কোন সিডিতে সেটা খোজার দায়িত্ব আপনার। কারন ১০০ টাকায় যে সিডি কিনেছেন সেখানে এধরনের কোন ফোল্ডার বা ফাইল নেই।
যদি দশ বছর আগে প্রশ্ন করতেন কম্পিউটারে বাংলা ব্যবহারের অবস্থা কি, অনায়াসে বলতাম খুবই ভাল। ডাটাবেজ/প্রোগ্রামিং কাজে না হোক অন্তত  প্রকাশনার সব কাজ করা যায়। বর্তমানে যদি একই প্রশ্ন করেন,
বলতেই হচ্ছে, মাইক্রোসফট, এডবি তারা ১০ বছর আগে থেমে নেই। মাইক্রোসফট ঘোষনা করে এক্সপি বন্ধ করে দিয়েছে। এডবি ওপেনটাইপ বাংলা সাপোর্ট করে না। যার অর্থ হচ্ছে ৭ ব্যবহার করলে ফটোশপ, ইলাষ্ট্রেটর, ইনডিজাইন ইত্যাদিতে বাংলা কাজের কথা ভুলে যেতে হবে। তিনি স্বিকার করেছেন ৩২ বিট ভার্শনে চলে, ৬৪ বিট ভার্শনে চলে না। যার অর্থ প্রিমিয়ার, আফটার ইফেক্টস সিএস৫ এর কথাও ভুলে যান। কারন এগুলির ৩২বিট ভার্শন বলে কিছু নেই।
আমরা আশাবাদি কারন ওটাই সম্বল।  আশা করি কোন একদিন বাংলায় সব কাজ করা যাবে। নিজের ভাষা ব্যবহারের জন্য কোন ব্যক্তি বা বিশেষ প্রতিষ্ঠানকে টাকা দিতে হবে না। বিশ্বের কোন দেশই সেটা করে না। চাইনিজ-জাপানীজ-হিব্রু সব ভাষায় তারা অনায়াসে উইন্ডোজ ব্যবহার করে। যে ভাষায় মাত্র কয়েক লক্ষ মানুষ কথা বলে সেই ভাষায়ও। ভাষা ব্যবহারে বিশ্বে ৭ নম্বর স্থানে থেকে আমরা পারব না কেন ?
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় কবিতা লিখেছিলেন, বাবা বলতেন, দেখিস একদিন আমরাও-
বাবা আজ অন্ধ।

No comments:

Post a Comment