অবশ্যই প্রকাশকের কাছে ধর্না দিতে পারেন। দুচারজনের কাছে বইয়ের কথা তোলার পর টের পেলেন বিষয়টা সহজ না মোটেই। বই লেখার চেয়ে ছাপানো কঠিন। প্রকাশক নতুন লেখকের লেখা পড়ে দেখা প্রয়োজন মনে করেন না, অধিকাংশের তেমন ব্যবস্থাই নেই। তারা অপেক্ষা করে আছেন কোন নামকরা লেখক তারকাছে লেখা দেবেন যার নামেই বই বিক্রি হবে।
বিষয়টি চালু আছে বেশ কয়েকবছর ধরে। ওয়াল ষ্ট্রিট জার্নাল বলছে একসময় সৌখিন প্রকাশনা বলে বিবেচিত এই পদ্ধতি বইয়ের জগত পাল্টে দিচ্ছে। এই পদ্ধতিতে আপনি বই ছেপে নিজেই বিক্রির চেষ্টা করতে পারেন। পুরনো ব্যবস্থায় কোনক্রমে একজন প্রকাশক পেলেও দেখা যাবে আপনাকে লেখক হিসেবে দেয়া হয়েছে বড়জোর ১০ ভাগ, আর নিজে ছেপে বিক্রি করলে ৫০ ভাগ পর্যন্ত পেতে পারেন। ই-বুক বিক্রি করলে ছাপার খরচ নেই কাজেই লাভ আরো বেশি। নামকরা প্রকাশক যতকপি বিক্রি করবেন (তারা ছাপলেই বেশি বিক্রি হবে এমন নিষ্চয়তা নেই) তারচেয়ে অনেক কম বিক্রি করে বেশি টাকা হাতে পেতে পারেন।
সেলফ পাবলিশিং পদ্ধতিতে বই ছাপলে আগে খরচ বেশি হত, এখন খরচ কমে গেছে। এমনকি অন্য প্রকাশকের চেয়েও কম দামে বই বিক্রি করা সম্ভব।
আর যারা নিয়মিত প্রকাশক তারাও বসে নেই। অনেকে এটাকেই ব্যবসা হিসেবে নিয়েছেন। আমাজনের রীতিমত পৃথক বিভাগ রয়েছে সেলফ পাবলিশিং এর জন্য। আপনি বই লিখবেন, নিজেই সবকিছু ঠিকঠাক করবেন, তারপর তাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। ছাপার খরচ আপনি দেবেন। ১০০ ডলারেই ছাপা হবে আপনার বই। লেখক হিসেবে আপনার হাতে এসে যাবে বেশকিছু কপি।
বিক্রির দায়িত্ব তাদের। এবিষয়ে অবশ্যই তাদের তুলনা নেই। তারপর সেই বিক্রি থেকে আপনি পাবেন রয়্যালটি।
আরেক পদ্ধতি হচ্ছে বুক-মেসিন ব্যবহার করা। যেখানে মুহুর্তের মধ্যে বই ছাপা-বাধাই হয়ে বের হয়। আগে ছেপে রাখা প্রয়োজন নেই, ক্রেতা আসার পর আপনি বই তৈরী করে দিতে পারেন। তবে এই যন্ত্রটা এখনও ততটা সহজলভ্য হয়নি।
কাজেই, লেখালেখিতে আগ্রহি হলে ছাপার জন্য এমন ব্যবস্থা নিতেই পারেন। আর লেখক না হয়ে যদি প্রকাশনা ব্যবসায় আগ্রহি হন তাহলেও এটা ভাল ব্যবসা হতে পারে। ছাপার খরচ লেখক দেবেন, আপনি বাকি কাজ করে লাভের টাকা গুনবেন। আপনার উপকার, লেখকের উপকার আর পাঠকের হাতে নিত্যনতুন বই।
অনেক নামকরা লেখক নিজেই সরাসরি পাঠকের কাছে যেতে করছেন। নতুন লেখকরা একেই পদ্ধতি হিসেবে বেছে নিচ্ছেন। আপনি করবেন না কেন ?
No comments:
Post a Comment