ক্যামেরা-র হচ্ছে ক্যামেরার সেন্সরে যে ছবি ধরা পরে সেটাই সরাসরি সেভ করা। অন্যভাবে বললে আপনি যার ছবি উঠিয়েছেন ঠিক সেটাই ফাইল হিসেবে পাওয়া। একে সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। এমনকি সাধারন সফটঅয়্যার ব্যবহার করে দেখাও যায় না। অন্যদিকে জেপেগ যখন ব্যবহার করেন তখন তা সবযায়গায় ব্যবহার করা যায়। তাহলে ক্যামেরা-র কেন ?
আপনার ক্যামেরায় যখন র-কে জেপেগ ফরম্যাটে সেভ করা হয় তখন বেশকিছু কাজ করে নেয় ক্যামেরা। যার মধ্যে রয়েছে ইমেজ প্রসেসিং। কালার টেম্পারেচার শব্দটি হয়ত শুনেছেন। সুর্যের আলো, মোমের আলো, ফ্লুরোসেন্ট টিউবের আলো এদের কালার টেম্পারেচার আলাদা, ফলে সঠিক সেটিং ব্যবহার না করলে ছবিতে তার প্রভাব পরে। যেমন সাধারন সেটিংএ ফ্লুরোসেন্ট টিউবের ছবিতে নীলচে ভাব দেখা যায়। ক্যামেরায় এই সেটিংকে বলা হয় হোয়াইট ব্যালান্স। আপনি ছবি উঠানোর আগে অবশ্যই সেটা ঠিক করে নিতে পারেন। নয়ত জেপেগ ফরম্যাটে সেভ করার আগে ক্যামেরা নিজেই ঠিক করে নেয়। ফলাফল, হয়ত রঙের তারতম্য। প্রায়শই এটা ঘটে। আকাশের রঙ কিংবা গাছের রঙ কিংবা শাড়ির রঙ পাল্টে যাওয়া নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন।
জেপেগ কনভার্শনের আগে আরো কিছু পরিবর্তন করে নেয় ক্যামেরা নিজেই। ছবির শার্পনেস বাড়ায়, যতটা আপনি পছন্দ করেন হয়ত তারচেয়ে বেশি। সবশেষে কম্প্রেস করে সেভ করে। সেকারনে কিছু মান নষ্ট হয়।
কাজেই জেপেগ ব্যবহারের অসুবিধে হচ্ছে, ছবি ওঠানোর আগে হোয়াইট ব্যালান্স ঠিক করা, তারপরও আপনি চাননা এমন পরিবর্তন ঘটে যাওয়া এবং ছবির মান হ্রাস পাওয়া। আর সুবিধে হচ্ছে, সব যায়গায় সরাসরি ব্যবহারের সুযোগ, দ্রুত ছবি উঠানো, মেমোরীতে কম যায়গা ব্যবহার ইত্যাদি।
কখনো কখনো এগুলি কার্যকর। যেমন খেলাধুলার ছবি উঠানোর সময় যদি খুব দ্রুত ছবি উঠানো প্রয়োজন হয়, কিংবা কোন অনুষ্ঠানে সাধারন ছবি হলেই চলে, কিংবা মেমোরী কার্ডে যায়গা কম থাকে তাহলে জেপেগ ব্যবহার করা সুবিধেজনক। অনেক অতিরিক্ত কাজের হাত থেকে রক্ষা পেতে পারেন এরফলে।
আর যদি একেবারে নিখুত ছবি প্রয়োজন হয়, খুব ভাল মানের প্রিন্ট প্রয়োজন হয় তাহলে ক্যামেরা-র। এর সুবিধে হচ্ছে আগে থেকে হোয়াইট ব্যালান্স নিয়ে মাথা ঘামানোর প্রয়োজন নেই। ছবি উঠানোর পর সফটঅয়্যার ব্যবহার করে ঠিক করে নেবেন। ছবি ডিটেইল পাওয়া যাবে অনেক বেশি ফলে উঠানোর সময় আলো ঠিক না থাকলেও পরে ঠিক করে নেয়া যাবে।
আর অসুবিধে হচ্ছে, সরাসরি ব্যবহার করা যায় না। বিশেষ সফটঅয়্যার ব্যবহার করে কনভার্ট করে নিতে হয়। মেমোরীতে অনেক বেশি যায়গা প্রয়োজন হয়। সেভ করতেও তুলনামুলক বেশি সময় নেয়। কন্টিনিউয়াস মোডে প্রতি সেকেন্ডে জেপেগ থেকে কম ছবি পাওয়া যাবে।
আপনার জন্য কখন কোনটি প্রয়োজন আপনিই ঠিক করে নিন।
কোন সফটঅয়্যার ব্যবহার করবেন সেটাও জেনে নিন। এডবি ফটোশপ সরাসরি র ফাইল ব্যবহার করে না। ফটোশপ বা লাইটরুমের জন্য এডবি ক্যামেরা-র নামে পৃথক প্লাগইন ব্যবহার করতে হয়। নাইকন ক্যাপচার এনএক্স সফটঅয়্যার সরাসরি র ফাইল ব্যবহার করে।
সাধারনত ক্যামেরা কেনার সময় র-কনভার্শন সফটঅয়্যার দেয়া হয়। না থাকলে অন্যভাবে সংগ্রহ করুন। আর ক্যামেরা কেনার বিষয় থাকলে সেটা র-মোড সাপোর্ট করে কিনা জেনে নিন।
No comments:
Post a Comment