বিজনেস সল্যুশন, এটাই নাম গ্রামীন ফোনের একটি সার্ভিসের। মাসে প্রায় হাজার টাকা বিল দেবেন বদলে আনলিমিটেড এজ কানেকটিভির সার্ভিস পাবেন। চালু হয়েছে বেশ কয়েকবছর আগে। কাজেই আপনি ধরে নিতেই পারেন, দেশের সবচেয়ে বড় কোম্পানী, সবচেয়ে বড় ব্রান্ড, সবচেয়ে বড় ট্যাক্সদাতা যখন বিজনেস সল্যুশন, সার্ভিস, এজ এই কথাগুলি বলছে তখন ইন্টারনেটের সমাধান হয়েই গেল।
সার্ভিসের (বাংলায় সেবা) নমুনা দেখা যাক। বছর দুয়েক আগে ডাটা ট্রান্সফার অধিকাংশ সময় থাকত ৫ কিলোবাইট/সে এর মধ্যে। এরপর ক্রমে সেটা বাড়তে থাকে। একসময় ১০ থেকে ২৫ কিলোবাইট পাওয়া যেত ভালভাবেই। অনেকেই সন্তুষ্ট ছিলেন এতে। অন্তত অন্যরা যখন এরথেকে ভালকিছু দিচ্ছে না।
কয়েকমাস আগে শুরু হয় সেবার নতুন নমুনা। হঠাত করেই সেই গতি নেমে আসে ২ থেকে ৪ এর মধ্যে। কোন কোন এলাকায় আরো কম। কখনো কখনো সংযোগ পাওয়াই কঠিন।
দৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করে দেখা গেল একসময় আবার আগের গতি ফিরে পেয়েছে। দুদিন চলল সেই অবস্থা, তারপর আবার। কেউ কেউ বিরক্ত হয়ে ভাবলেন সামনের মাসে এটা বদল করব। মাস শেষ হওয়ার ঠিক আগ মুহুর্তে আবার লক্ষ্য করলেন সব স্বাভাবিক। একসময় বুঝে গেলেন তাদের সল্যুশনের নমুনা। তারা নিজেরাই একটি ফেয়ার ইউজ পলিসি ঠিক করে নিয়েছেন। মাসে ২ থেকে ৪ দিন ইন্টারনেট ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। বাকি সময় ইমেইল দেখার জন্য ঘন্টাখানেক খোচাখুচি করবেন।
সম্ভবত তাদের সেই ফেয়ার ইউজ আরো ফেয়ার হয়েছে। বর্তমানে পুরো মাসের কোন এক মুহুর্তেও ৫ কিলোবাইটের ওপর ডাটা ট্রান্সফার হয় না। ওঠানামা করে ১ থেকে ২ এর মধ্যে। আপনি নিজের টাকা খরচ করে তাদের কাছে ফোন করতে পারেন, অভিযোগ জানাতে পারেন, যিনি ফোন ধরবেন তাকে গালাগালি করতে পারেন। সে বেচারাকে অনেক টাকা দিয়ে রাখাই হয়েছে গালাগালি শোনার জন্য।
বলতে পারেন একথা বলে লাভ কি ? প্রশ্ন করতে পারেন, সমাধান কি ? আরেকজনের কাছে গেলেও একই ঘটনা ঘটবে। একজন একভাবে ঠকাচ্ছে আরেকজন আরেকভাবে ঠকাবে। সরকারের যখন চোখকান বন্ধ। জরিমানার টাকা হাতে দিলে সব অপরাধ করা যায়।
সমাধানের একটি উদাহরন দিতে পারি। একবার আর্জেন্টিনায় হঠাত করে টমেটোর দাম খুব বেড়ে গেল। তারা নিজেরা একমত হয়ে ঠিক করল অমুক দিন থেকে কেউ টমেটো কিনবে না। সাথেসাথে ফল। বিনা বাক্যব্যয়ে মুহুর্তের মধ্যে দাম কমে এল।
সমস্যা একটাই। বাঙালী অন্যদের মত একমত হয় না। নইলে একবার চেষ্টা করে দেখুন না! এইসব সেবাদানকারীদের সেবা কি তা শেখানো যায় কিনা। যে কোন একজনকে টার্গেট করে তাকে টাকা দেয়া বন্ধ করুন। ফেসবুক, টুইটার থেকে শুরু করে সব পদ্ধতি ব্যবহার করে অন্যদের বলে দিন কমপক্ষে এই পরিমান স্পিড না পেলে অমুক দিন থেকে তাকে টাকা দেবেন না। বর্তমানে বিকল্প ইন্টারনেট ব্যবস্থা রয়েছে। তাদের সব বাহাদুরী আপনার টাকায় সেটা ভুলে যাচ্ছেন কেন ?
বাঙালী একমত হতে পারে সেটা দেখার সৌভাগ্য কি কখনো হবে ?
No comments:
Post a Comment