তিউনিসিয়ায় গনআন্দোলনের ফলে সরকারের পতনের পর থেকেই আলোচনা হচ্ছিল আন্দোলন মধ্যপ্রাচ্যের অন্য দেশগুলোতে ছড়িয়ে পরবে কিনা। আলজিরিয়া, ইয়েমেন এসব দেশে মানুষ পথে নেমেছে। সবাইকে ছাপিয়ে খবরের শীর্ষে উঠে এসেছে মিসর। ২৫ তারিখ থেকে মানুষ রাজপথে প্রতিবাদ জানাতে শুরু করেছে এবং ৪ দিন পর তা সরাসরি সরকারের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে। এক পর্যায়ে সরকার ইন্টারনেট এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার পুরোপুরি বন্ধ করে দিয়েছে।
আন্দোলনের হাতিয়ার হিসেবে ইন্টারনেটের ব্যবহার ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে বিশ্বব্যাপি। ফেসবুক-টুইটারের মত সাইটের মাধ্যমে মানুষ মতবিনিময় করে একত্র হচ্ছে। ঘটমান বিষয়ের ভিডিও প্রকাশ করা হচ্ছে ইউটিউবে। ফলে ইন্টারনেটও সরকারের আক্রমনের শিকার হচ্ছে।
মিসরে শুক্রবার দুপুরের নামাজের পর থেকেই মানুষ সরাসরি রাজপথে বিক্ষোভে জড়িয়ে পরে। পর্যায়ক্রমে পুলিশের লাঠিচার্জ, কাদানো গ্যাস, রাবার বুলেট, সন্ধ্যায় কারফিউ জারী, সেনাবাহিনী রাজপথে নামানো, মিলিটারী হেলিকপ্টার-ট্যাংক ইত্যাদি ব্যবস্থার দিকে গেছে সরকার। অন্যদিকে এরফলে আন্দোলন কমার পরিবর্তে ক্রমশ বেড়েই চলেছে। কারফিউ অমান্য করে রাতে মানুষের সংখ্যা বেড়েছে, সরকারী দলের অফিসসহ অনেক ভবনে আগুন দেয়া হয়েছে।
তাদের মুল দাবী, ৩০ বছর ধরে দেশ শাসন করা হোসনী মোবারক দেশ চালাতে ব্যর্থ। দেশে বেকারের সংখ্যা বাড়ছে, দ্রব্যমুল্য বাড়ছে। কাজেই তাকে সরে যেতে হবে।
মিসর মধ্যপ্রাচ্যে আমেরিকার সবচেয়ে বড় বন্ধু। বছরে ১৩০ কোটি ডলারের বেশি দেয়া হয় তাদেরকে, যার বড় অংশ সামরিক অস্ত্রে ব্যয় হয়। আমেরিকার পক্ষ থেকেও ভুমিকার সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে।
গভীর রাতে প্রেসিডেন্ট হোসনী মোবারক টেলিভিশন ভাষনে মন্ত্রীসভা বাতিলের কথা বলেছেন। নিজের সরে যাওয়া প্রসংগে কোন কথা বলেননি। এমনকি নতুন নির্বাচনের কথাও বলা হয়নি। তার বক্তব্য থেকে এটা পরিস্কার, অচিরেই সেখানে ইন্টারনেট চালু হচ্ছে না।
আন্দোলন শুরু হওয়ার পর থেকেই হঠাত করে সেখানে ইন্টারনেটের ব্যবহার অত্যন্ত বেড়ে যায়। এরপরই তা একেবারে শুন্যের কোঠায় নেমে আসে।
অবশ্য নুর গ্রুপ নামের একটি আইএসপি সেখানে ইন্টারনেট ব্যবস্থা চালু রেখেছে। মিসরের স্টক এক্সচেঞ্জ সহ অনেক বিদেশী কোম্পানী তাদের সেবা ব্যবহার করেন। অনেকে বলছেন এই ব্যতিক্রমী ব্যবস্থার ফলে আগামীতে তাদের ব্যবসা আরো ভাল করবে।
মিসর ৮ কোটি মানুষের দেশ। অধিকাংশ মানুষই যোগাযোগের জন্য কম্পিউটার-মোবাইল ফোন ব্যবহার করে।
No comments:
Post a Comment