একসময় ভিডিও ক্যামেরায় রেকর্ডিং মাধ্যম বলতে টেপ বুঝানো হত। বর্তমানে সেই অবস্থা নেই। হার্ডডিস্ক, ডিভিডি, মেমোরী কার্ড ইত্যাদি ব্যবহার হচ্ছে। বরং এগুলির কাছে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ছে টেপ। আপনি যদি ক্যামেরা কিনতে যান তাহলে কোনটি বেছে নেবেন। কোন মাধ্যমের সুবিধা কি, অসুবিধাই বা কি। কিংবা আরো সহজ কথায়, কোন মাধ্যম আপনার জন্য উপযোগি সেটা জানা থাকলে কেনার পর দুঃখ করতে হয় না। সেজন্যই এই তথ্য।
প্রথমেই আপনার ঠিক করে নেয়া উচিত আপনি হাই-ডেফিনিশন সুবিধে সহ কিনবেন নাকি শুধুই ষ্ট্যান্ডার্ড ডেফিনিশনে কাজ চলবে। হাই ডেফিনিশন ভিডিও প্লে করার জন্য হাই ডেফিনিশন টিভি প্রয়োজন। এই মুহুর্তে বাংলাদেশে সেটার তেমন প্রচলন নেই। কাজেই যদি পারিবারিক ভিডিও করে নিজেরাই দেখতে চান সেজন্য ষ্ট্যান্ডার্ড ডেফিনিশন ক্যামেরাতেই কাজ চলতে পারে।
এবারে মিডিয়ার কথায় আসা যাক। বর্তমানে সবচেয়ে সহজ ব্যবহারযোগ্য মাধ্যম হচ্ছে মেমোরী কার্ড এতে কোন সন্দেহ নেই। ৩২ গিগাবাইট কার্ডে কয়েক ঘন্টার ভিডিও রেকর্ড করা যাবে, রেকর্ড করার পর তা কম্পিউটারে নিতে পৃথক হার্ডওয়্যার প্রয়োজন নেই। একই কার্ড বহুবার ব্যবহার করা যাবে, কাজেই বারবার টেপ বা ডিভিডি কেনার মত খরচের হাত থেকে বাচা যাবে।
এর অসুবিধে হচ্ছে, প্রধানত ভিডিওর মান। মিনি-ডিভি টেপে যে মানের ভিডিও পাওয়া যায় সে মানের ফ্লাশ মেমোরী ভিত্তিক ক্যামেরা নেই বললেই চলে, অন্তত সাধারন বাজেটের মধ্যে (ভিডিও কোডেক এবং ডাটা ট্রান্সফার রেটের কারনে)। কাজেই আপনাকে ধরেই নিতে হবে ফ্লাশ মেমোরী ভিত্তিক ভিডিওর মান টেপের তুলনায় খারাপ।
এডিটিং এর জন্য অত্যন্ত দ্রুতগতির কম্পিউটার প্রয়োজন। টেপ থেকে ক্যাপচার করা ভিডিও এডিট করতে যে সময় প্রয়োজন হয় তারচেয়ে অনেক বেশি সময় প্রয়োজন হবে মেমোরীভিত্তিক ভিডিও এডিটিং কাজে।
ব্যাকআপ রাখা কষ্টকর। কার্ডটি যেহেতু আবারও ব্যবহার করা হবে সেহেতু অন্য কোনভাবে ব্যাকআপ রাখতে হয়।
টেপের সুবিধে হচ্ছে এর ভিডিও মান অন্যান্য মাধ্যম থেকে ভাল। ব্যাকআপ রাখা সহজ। সরাসরি ক্যাসেটটিই রেখে দিতে পারেন। একটি ক্যাসেট অযত্নে নষ্ট হলেও সেখান থেকে কিছু পরিমান হলেও তথ্য উদ্ধার করা সম্ভব। সিডি-ডিভিডি-হার্ডডিস্ক নষ্ট হলে সেখান থেকে কিছুই পাওয়া সম্ভব না।
টেপের অসুবিধে হচ্ছে প্রতিবার আপনাকে ক্যাসেট কিনতে হবে (যদি একই ক্যাসেট একাধিকবার ব্যবহার করা যায়, ভিডিওর মানের ক্ষতি মেনে নিয়ে)। আরেক অসুবিধে হচ্ছে ক্যামেরা থেকে কম্পিউটারে নেয়ার জন্য ক্যাপচার কার্ড প্রয়োজন হয়।
হার্ড ডিস্ক আরেকটি মাধ্যম। বর্তমানে যেহেতু কার্ডের ধারনক্ষমতা বেড়েছে এবং দাম কমেছে সেহেতু হার্ডডিস্ক বিবেচনায় না আনলে ক্ষতি নেই। এক কার্ড শেষ হলে অনায়াসে সেটি খুলে আরেকটি কার্ড ব্যবহার করতে পারেন, ভিডিও দেয়া প্রয়োজন হলে ইচ্ছে করলে কার্ডটিই খুলে দিতে পারেন। হার্ডডিস্কের ক্ষেত্রে সেটা করার উপায় নেই। কাউকে ভিডিও দেয়া প্রয়োজন হলে ক্যামেরাটিই দিতে হয়, এবং যায়গা শেষ হলে আগের ভিডিও মুছে সেটা খালি করতে হয়।
ডিভিডি মাধ্যম অনেকের কাছে প্রিয় সহজে ব্যবহারের কারনে। সরাসরি ডিভিডিতে রেকর্ড করে তাকেই ডিভিডি প্লেয়ারে প্লে করা যায়। রি-রাইটেবল ডিভিডি ব্যবহার করে একই ডিস্কে বারবার রেকর্ড করা যায়।
এই মাধ্যমের সমস্যা হচ্ছে ডিভিডির স্থায়িত্ব নিয়েই। খুব সহজেই নষ্ট হতে পারে। আর ভিডিওর মান নিয়েও কথা থেকে যায়।
No comments:
Post a Comment