June 14, 2010

ইন্টারনেটে টাকা আয় : কি প্রস্তুতি প্রয়োজন

ইন্টারনেট ব্যবহার করে ঘরে বসে কিভাবে টাকা আয় করা যায়, কাজ কোথায় পাওয়া যায় ইত্যাদি সম্পর্কে কিছুটা হলেও ধারনা হয়েছে ধরে নেয়া যায়। অনেকগুলি পোষ্ট লেখা হয়েছে এই বিষয়গুলি নিয়ে। তারপরও অনেকের কাছেই প্রশ্ন, চেষ্টা করেও কাজ পাচ্ছি না কেন। কাজ পাওয়ার এবং করার জন্য কোন বিষয়গুলির দিকে দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন একবার জেনে নিন।
উদাহরন হিসেবে গ্রাফিক ডিজাইনের বিষয় উল্লেখ করা হচ্ছে। শুধুমাত্র ফটোশপে দক্ষতা থাকলে এই কাজ করা সম্ভব। ইন্টারনেটের ব্যানার বিজ্ঞাপন থেকে শুরু করে বইয়ের প্রচ্ছদ তৈরীর কাজ আউটসোর্সিং সাইটগুলোতে দেখেছেন নিশ্চয়ই। কথা হচ্ছে দক্ষতা বলতে আসলে কতটুকু জানা বোঝায়। সেটা যাচাইয়ের উপায় কি। দক্ষতা বাড়ানোর উপায়ই বা কি।
প্রথম কথা, সার্টিফিকেট লাভ করা যেমন শিক্ষালাভ বুঝায় না তেমনি কোথাও কোর্স করা দক্ষতা বুঝায় না। দক্ষতা হচ্ছে আপনাকে কোন করতে দিলে সেটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ঠিকভাবে করার সক্ষমতা লাভ করা। এর সাথে অভিজ্ঞতার বিষয় ওতপ্রোতভাবে জড়িত। কাজেই দুমাসের কোর্স করে ফটোশপে দক্ষ হয়ে গেছেন একথা যদি ধরে নেন তাহলে কাজ না পাওয়ারই কথা।
কাজেই, যদি শিখতে চান এবং সেটা শিক্ষা কাজে লাগিয়ে অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে সোজা পথে চলুন।
ফটোশপ শিখুন। সামনে কোন ভাল ডিজাইন দেখলে সেটা অনুকরন করে কাজ করুন। বাস্তবে যেধরনের কাজ করতে হবে সেগুলি অন্যেরা কিভাবে করেছে সেটা দেখুন এবং তাদের পদ্ধতি শিখুন।
শেখার জন্য কোর্স করা সুবিধেজনক কিন্তু কখনও খোজ করেছেন কি যিনি শেখাচ্ছে তিনি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ করেন কি-না। গ্রাফিক ডিজাইন অত্যন্ত জল শৈল্পিক বিষয়। প্রতিবার আপনাকে নতুন কিছু করতে হবে। প্রতিটি রঙ, প্রতিটি রেখা ব্যবহারের অর্থ থাকতে হবে। কাজেই কোর্স করার পাশাপাশি (অথবা আদৌ কোর্স নিয়ে মাথা না ঘামিয়ে) বই পড়তে শুরু করুন। ইন্টারনেটে খোজ করলে বিনামুল্যে বহু বই-পত্রিকা-টিউটোরিয়াল পাওয়া যাবে। মনোযোগ দিয়ে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পড়ুন এবং যা করতে বলেছে সেটা করুন। আবারও মনে করিয়ে দিতে হচ্ছে, ফটোশপের কমান্ড জানার অর্থ ডিজাইনার হওয়া না। ভাল ডিজাইনার অর্থ যে ডিজাইনের ভাল-মন্দ বোঝে এবং ভালটা করতে পারে। ডিজাইনেরও ব্যাকরন রয়েছে যার বাইরে যাওয়া যায় না।
যে সাইটগুলি গ্রাফিক ডিজাইনের কাজ দেয় তাদের অনলাইন টেষ্টের ব্যবস্থা রয়েছে। এর ওপর ভিত্তি করে আপনার রেটিং ঠিক করা হয়। যিনি কাজ দেবেন তিনি এটা দেখে আপনার দক্ষতা সম্পর্কে ধারনা পান।  সেখানে নিয়মিতভাবে টেষ্ট দিন। নিজের রেটিং যতটা সম্ভব বাড়ান। অন্যদের রেটিং দেখুন। লক্ষ করলে দেখবেন রেটিং অনুযায়ী একজনের ঘন্টাপ্রতি রেট ৫ ডলার যেখানে আরেকজনের ৪০ ডলার। দুজনের পার্থক্য যোগ্যতায়। যার দক্ষতা ঘন্টায় ৪০ ডলার উপার্জন করার তিনি সহজে বড় কাজ পাবেন। নিজেকে যোগ্য হিসেবে প্রমান করুন।
নিজের করা সেরা কাজগুলি আপনার প্রোফাইলে নিয়মিত আপলোড করুন। এগুলি দেখে সন্তুষ্ট হলে তবেই আপনাকে কাজ দেয়া হবে। অন্যদের করা কাজগুলি দেখে তারচেয়েও ভালকিছু করার চেষ্টা করুন।
শুরুতেই বেশি টাকা আশা করবেন না। অল্প টাকার কাজ পেতে চেষ্টা করুন। দক্ষতা যত বাড়বে ক্রমেই তত বড় কাজের সুযোগ পাবেন। প্রথম কাজ পেতে কয়েক মাস লেগে যেতে পারে।
এখানে ফটোশপের কথা উদাহরন হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কোন ধরনের কাজ করতে চান সেটা দেখে সেই বিষয়ে শেখার চেষ্টা করুন।
পুরনো আরেকটি বিষয় উল্লেখ করতে হচ্ছে, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই টাকা দেয়া হয় অনলাইনে। আপনি সেটা হাতে পাবেন কিভাবে। মালয়েশিয়ার এক কোম্পানী রয়েছে যারা পে-পল একাউন্ট খুলতে সহায়তা করে (অবশ্যই মালয়েশিয়ানদের জন্য)। দুঃখজনকভাবে এত চাহিদার পরও বাংলাদেশীদের জন্য কেউ এগিয়ে আসেনি। এমনকি যারা কাঝ খোজ করেন তাদেরও প্রত্যেকের আগ্রহ একা কিছু করার। অথচ একা না হয়ে কয়েকজনের গ্রুপ তৈরী করলে আউটসোর্সিংএর কাজ  করা অনেক সহজ হয়। গ্রুপের কারো বিদেশে একাউন্ট করার সুযোগ থাকতেই পারে।
কাজেই ইন্টারনেটে কাজ করে অর্থ উপার্জন বিষয়ে একেবারে সরল বক্তব্য,
কাজ করা সম্ভব কি-না ?
সম্ভব। বাংলাদেশে অনেকেই করছে।
সহজ কি-না ?
সহজ বলে কোন কথা নেই।

1 comment:

  1. আমার নাম আমির। আপনার আলোচনা আমার কাছে ভালোই লেগেছে। ধন্যবাদ

    ReplyDelete